রবীন বসু
আষাঢ় কথা
তোমাকে বলেছি কি সেই আষাঢ়ের কথা?
সেই মেঘভাঙা বৃষ্টির কথা?
মনোহর দাস তড়াগ থেকে যে কুমারী হাওয়া
বৃষ্টিভেজা হয়ে এইমাত্র উঠে এল শহরের ক্রংক্রিটে
তাকে কেউ স্পর্শ করেছে?
জঙ্গল অতিক্রম করে যে দূরত্ব, শালপাতার সবুজ
আমি তাকে বৃথাই বর্ষার গান শোনাতে চাই
সে তো কবেই ভিজে জবুথবু।
আঁধার আবছায়া ঘাটে যে মাঝি নৌকো নিয়ে
ভিজে যাচ্ছে বহুক্ষণ যাত্রীর প্রতীক্ষায়
আমি তার অপেক্ষার কাছে নতজানু।
তোমাকে বলেছি কি সেই আষাঢ়ের কথা?
এই আচমকা জলে ডোবা কলেজ স্ট্রিট চত্বরের কথা?
কফিহাউসের ধোঁয়া, কবি কবি গন্ধ আর
গাঁজাভরা সিগারেট চেয়ে খাওয়া বান্ধবীর কাছে…
তোমাকে বলিনি সেই শর্তের কথা, কানে শোনা
‘তিনটে কদমফুল যদি এখনই এনে দিতে পার,
তোমার প্রপোজ আমি ভেবে দেখতে পারি।’
হাওয়া খবর দিল, মধ্য নয় দক্ষিণ কলকাতায় যাও
গড়িয়াহাটের কাছে গোলপার্ক ইনস্টিটিউট অফ কালচার
লেকের ধার… থোকা থোকা কদমফুল ফুটে আছে
তোমাকেই বলতে ভুলে গেছি, শুধু তোমাকেই
সেই আষাঢ় মাস, জলমগ্ন কলকাতা, তিনটে কদমফুল
এখন কাকভেজা ছেলেটির স্মৃতি থেকে উধাও…