ধারাবাহিক রচনা

 

আকাশের আড়ালে আকাশ

সুদীপ বসু

‘ডেড-সোল্‌স-এর দ্বিতীয় খন্ড পড়লাম। অত্যন্ত কাঁচা লেখা।’

 

 

       মস্কো। ১৮৪২। প্রকাশিত হ’ল ঊনবিংশ শতকের দুনিয়া কাঁপানো উপন্যাস ‘ডেড সোল্‌স’। ভ্যাসিলিয়েভিচ লেখক নিকোলাই গোগোল। মিখাইল ইভানোভিচ চিচিকোভ, একজন মাঝবয়সী মধ্যবিত্ত লোক ‘এন’ নামাঙ্কিত শহরে এসেছে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে। রুশদেশে তখন ভূমিদাসপ্রথা রমরমিয়ে চলছে। (১৮৬১ সালে লোপ পায়)। এই জমিক্রীতদাস প্রথায় মানুষের মালিক তখন মানুষ। দরিদ্র নিরন্ন প্রজাদের প্রভু ধনী কৃষকরা, জমিদাররা। কার দখলে কতজন ভূমিদাস রয়েছে, এই দিয়ে তাদের ঐশ্বর্য্য ও সামাজিক গুরুত্ব মাপা হয়। ভূমিদাসদের কেনা যায়, বেচা যায়, বন্ধকও দেওয়া যায়। সেনশাস বা জনগণনায় নির্ধারিত হয় কোন সামন্তপ্রভুর তাঁবে কতজন ভূমিদাস রয়েছে। এর জন্য তাদের সরকারকে মাথাপিছু কর-ও দিতে হয়। কিন্তু সেনশাসের তো কোনো ঠিকঠিকানা নেই। হয় বহু বছর বাদে বাদে, অনিয়মিতভাবে। ইতিমধ্যে অনেক ভূমিদাসের মৃত্যু ঘটে। কিন্তু পরবর্তী সেনশাস অবধি তাদের জন্য কর গুণে যেতে হয় জমিদারদের। এককথায় এটাই চিরকেলে প্রথা।

চিচিকোভ এসেছে এই মৃত প্রজাদের আত্মাকে কিনে নিতে। অর্থাৎ ‘মৃত আত্মার’ খরিদ্দার সে। টাকা দিলে জমিদাররা তো সানন্দেই মৃত আত্মা বিক্রী করে দেবে। কেননা এতে অর্থ-ও মিলবে আবার অনর্থক করের হাত থেকে রেহাইও পাওয়া যাবে। মিখাইল ইভানোভিচ চিচিকোভের স্বপ্ন সে একদিন বিপুল সংখ্যক মৃত আত্মার মালিক হবে। মরে হেজে যাওয়া ভূমিদাসদের ভূতের প্রভু। তবে এটা কোনো নিপাট নিরীহ স্বপ্নবিলাস নয়। চিচিকোভ আগে ছিল সরকারী কর্মচারী, দুর্নীতির দায়ে তার চাকরী চলে যায়। চিচিকোভ ভেবে নিয়েছিল এই প্রজাদের কাগজেকলমে বন্ধক রেখে সে প্রচুর টাকা ঋণ নেবে। তার বেশ কিছুটা বিনিয়োগ করে বাকিটা ইচ্ছেমত খরচ করবে। এই কারণে সে এইসত্যটা বেমালুম চেপে গিয়েছিল, যে এই ‘প্রজারা’ আসলে মৃত।

সংক্ষেপে এই-ই ছিল ‘ডেড সোল্‌স’-এর ভিত্তিভূমি। আধাবাস্তবতা আধাকল্পনা। তবে আলেকজান্ডার পুশকিনের মুখে শোনা একটি ছোট্ট কাহিনী ছিল এই রচনার চাবিকাঠি। লেখার শেষদিকে অবশ্য নিজের শহরে ফিরে আসে চিচিকোভ। চারশতাধিক মৃত প্রজার আত্মা তখন তার ঝুলিতে। প্রথমে সম্বর্ধিত হলেও পরে তার ফাঁকিবাজি চাউর হয়ে যায়। রটে যায় যে তার প্রজারা সকলেই মৃত। এছাড়াও গভর্ণরের মেয়ের সঙ্গে একটা সম্পর্ক নিয়েও তোলপাড় ওঠে। শেষমেষ শহর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় সে।

এখানে এই ফাঁকে বলে নেওয়া যাক এই উপন্যাসের যে সংস্করণ বাজারে পাওয়া যায় তা আদতে এর প্রথম খন্ড। বেশ কিছু এডিশনের সঙ্গে পরিশিষ্ট হিসেবে দ্বিতীয় খন্ডের প্রথম পাঁচটি অধ্যায় জুড়ে দেওয়া হয় – যেটি আসলে দ্বিতীয় খন্ডের প্রথম ও বাতিল হয়ে যাওয়া খসড়া। তীব্র অসন্তোষে গোগোল নিজের হাতে এই অংশটি ছেঁটে দেন। তাঁর পরিকল্পনা ছিল দান্তের ‘ডিভাইন কমেডি’-র মতো তিন ভাগে ‘ডেড সোল্‌স’ সম্পূর্ণ করবার –উপন্যাসটিকে একটি মহাকাব্যের রূপ দেওয়ার। কিন্তু কাল হল ১৮৪২-এ আলাদাভাবে প্রথম খন্ডটি প্রকাশ পেয়ে যাওয়ায়।

প্রকাশ পাওয়া মাত্র তোলপাড় উঠল পাঠক ও বিদগ্ধমহলে। সমালোচকদের মধ্যেও। এই তীব্র প্রতিক্রিয়ার সিংহভাগই প্রশংসা, অকুন্ঠ প্রশংসা। অনেকে বললেন ঊনবিংশ শতকের রুশ সাহিত্যের সেরা রত্ন এই রচনা। রুশ সমাজব্যবস্থার একই সঙ্গে মেধাদীপ্ত, বাস্তব, পরাবাস্তব, বিশ্লেষণাত্মক, ব্যাঙ্গাত্মক, স্পষ্ট ও রহস্যময় প্রতিবেদন নিকোলাই গোগোলের এই কালজয়ী সৃষ্টি। প্রতিক্রিয়াশীলদের বাঁকা কথায় আর প্রগতিশীলদের প্রবল পিঠচাপড়ানোয় সরগরম হ’য়ে উঠল রাশিয়ার আপাতশীতল সাহিত্যতীর্থ। যাঁদের মতামতের ওপর গোগোল একান্তভাবে নির্ভর করতেন তাঁরা প্রাণ খুলে সার্টিফিকেট দিলেন লেখাটির পক্ষে।

 

উপন্যাসের দ্বিতীয় খন্ডের জন্য উন্মুখ হয়ে রইলেন পাঠকরা। রাতারাতি গোগোলকে দেশের সেরা লেখকের আসনে বসানো হ’ল। তাঁর থেকে প্রত্যাশাও বহুগুণ বেড়ে গেল।

স্বাভাবিক ভাবেই গোগোল এতটা আশা করেননি। ওই বিপুল প্রশংসা, বাহবা, আলোচনা – সমালোচনার তীব্র তুফানের ভেতর পড়ে তাঁর মাথা গেল ঘুরে। নিজেকে সর্বকালের সেরা রুশ লেখক বলে ভাবতে লাগলেন। ভাবতে লাগলেন তিনি রুশ সাহিত্যের নবযুগের মসীহা। দ্বিধাদীর্ণ হৃদয়ে, উদ্বেগে, সংকোচে, অনিশ্চয়তায় হাত দিলেন দ্বিতীয় খন্ডের কাজে। কিন্তু যত লেখেন ততই অসন্তুষ্টি যেন ভর করে বসে তাঁর ঘাড়ে। শুধুমাত্র লেখার খাতিরেই তিনি ইউরোপ চষে বেড়ালেন। বিশেষ করে জার্মানি আর ইতালি। লেখেন, ছিঁড়ে ফেলেন, লেখেন, খারিজ করে দেন। স্বপ্নের লেখাটিকে, পাঠক সমালোচকের প্রত্যাশার লেখাটিকে যেন ছুঁতেই পারেন না কিছুতেই। দ্বিতীয় খন্ডে চিচিকোভকে নিয়ে গেলেন অন্য একটি শহরে, অন্য একটি ধান্ধায়। ধুরন্ধর চিচিকোভ আবার শুরু করল গভীর কারসাজি। সে অলস জমিদার তেনতেত্‌নিকোভের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল। ঘটনাক্রমে হতদরিদ্র ক্লোবিয়েভের থেকে জমি কেনার সময় তার এক ধনী আত্মীয়ার উইল নকল করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেল। এত অবধি পৌঁছে মন ঘুরে গেল গোগোলের। পছন্দ হ’ল না। বাতিল করে দিলেন খসড়া পান্ডুলিপি। এগোলেন নতুন পথে। কিছুদিন বাদে সেটিকেও পরিত্যাগ করলেন। একধরণের উন্মাদনা গ্রাস করল তাঁকে। পথ থেকে পথে খুঁজে বেড়াতে লাগলেন তিনি। কী হবে সেই স্বপ্নের খসড়া?‘ডেড সোল্‌স’-এর দুনম্বর অংশ। স্বেচ্ছায় ক্রমাগত ধ্বংস করতে লাগলেন নিজের শরীর। ঘুমহীন রাত, নিরন্ন দিন। হাড়ভাঙা মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম। মেধার অত্যাধিক চর্চা। অবশেষে পথ হারালেন গোগোল।

 

*********               ***

মস্কো সহর। সাল ১৮৫২। ফেব্রুয়ারীর এক শীতসন্ধ্যা। প্রথম খন্ড প্রকাশ পাওয়ার পর দীর্ঘ দশ বছর কেটে গেছে। স্থান গোগোলেরই প্রাণের বন্ধু কাউন্ট তলস্তয়ের (লেখক নন) বাড়ির বসার ঘর। সেখানে সেদিন কী ঘটছে তা জানতে আমরা বরং সরাসরি চলে যাই ও বাড়ির গৃহভৃত্য তেরো বছরের কিশোর সিমিয়নের বয়ানের কাছে। সেদিন খুব ঠান্ডা পড়েছিল। ফায়ার প্লেসের কাছেই বসেছিলেন গোগোল। সিমিয়নকে বললেন একটা নির্দিষ্ট ফোল্ডার এনে দিতে। ফোল্ডারটি হাতে পাওয়ার পর গোগোল তার ভেতর থেকে  ফিতে দিয়ে বাঁধা পাঁচশোরও বেশি কাগজের বান্ডিল বের করলেন। তারপর ফায়ার প্লেসের দরজাটা খুলে বান্ডিলটা ছুঁড়ে দিলেন আগুনে। সিমিয়ন ভয়ে চিৎকার করে উঠল ‘প্রভু! কী করছেনটা কী।’‘চুপ করো’, গোগোল ধমক দিলেন,‘এটা তোমার বিষয় নয়।’তারপর একটু থেমে গলা নীচু করে বললেন ‘তুমি বরং এদের জন্যে প্রার্থনা করো সেমিয়ন’। কিন্তু বান্ডিলবাঁধা কাগজগুলো পুড়ল না। গোগোল বান্ডিলটা বের করে আনলেন ফায়ার প্লেসের ভেতর থেকে।তারপর ফিতে খুলে একেকবারে কয়েকটা করে কাগজ হাতে নিয়ে সযত্নে মোমবাতির আলোয় পুড়িয়ে দিলেন। সব পোড়ানো হ’য়ে গেলে তিনি নিজের শরীরটাকে আক্ষেপে হতাশায় ছুঁড়ে দিলেন বিছানায় আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন।

এই বান্ডিলবাঁধা পাতাগুলির ভিতরেই ছিল ‘ডেড সোল্‌স’-এর সম্ভবত সম্পূর্ণ এবং শেষ পান্ডুলিপির খসড়া।

কিন্তু এই বিপুল ধ্বংসের মূলে কি ছিল শুধুই লেখকের উচ্চাকাঙ্খা আর আত্মগরিমা? ক্রমবর্ধমান অসন্তুষ্টি আর ব্যর্থতার আতঙ্ক? ইতিহাসের সাক্ষ্য অবশ্য অন্য পথে গেছে। তা হলো প্রবল অন্তর্দ্বন্দ্ব – ঈশ্বরের আর দুশমনের, ভালোর আর মন্দের, পবিত্র-অপবিত্রের। অন্তর্দ্বন্দ্ব গোগোলের হৃদয়ের প্রান্তরে। মাতভে কনস্টান্তিনোস্কি নামক একজন আর্চবিশপের অন্ধভক্ত ছিলেন গোগোল। এই আর্চবিশপ তাঁকে বারবার অনুরোধ করতেন সাহিত্যের পথ ছেড়ে আসতে। কেননা সাহিত্য অশুভর লীলাক্ষেত্র। শয়তানের মুক্তাঞ্চল। সাহিত্যে অসাধু দুশ্চরিত্রের ভিড়, অনেক ক্ষেত্রেই তারাই নায়ক। তারাই শাসন করে চারপাশ (যেমন ‘ডেড সোল্‌স’-এর চিচিকোভ)। সাহিত্য মানুষের মনের গহন অন্ধকারকে মহিমান্বিত করে। ধর্মের পথ-ই একমাত্র নৈতিকতার পথ, আলোর পথ, চরিত্র গঠনের সর্বোত্তম রাস্তা। আর কে না জানে গুরুদেবের অনুরোধে আদেশের সুর বড় হয়ে বেজে ওঠে। গোগোল যে অন্তর্দ্বন্দ্বে দীর্ণ হয়ে যাচ্ছিলেন তা আসলে ধর্মীয় নৈতিকতা বনাম সাহিত্যের সংঘাত। কনস্টান্তিনোস্কি-র মতে শিল্পসাহিত্যের ক্ষেত্র আসলে দুর্নীতি আর অশুদ্ধির আখড়া। আর একথা তো সত্যি হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও গোগোল চিচিকোভকে ক্রমাগত অধঃপতনের হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে পারছিলেন না। তিনি নিজেই টের পাচ্ছিলেন তাঁর লেখায় দুবৃত্তরা, দাগী অপরাধীরা, ধান্ধাবাজ মধ্যবিত্ত সামন্তপ্রভু আর তাদের দালালরা যে পরম মমতার ছোঁয়ায় ফুটে ওঠে সৎ বিবেকবান সত্যনিষ্ঠ চরিত্ররা ততটা স্পষ্ট হন না। আর সেই কারণেই নাকি এই সিদ্ধান্ত। এই চরমতম কঠোর সিদ্ধান্ত। গোটা পান্ডুলিপিটাকে লেলিহান অগ্নিগ্রাসে নিক্ষেপ করা।

প্রখ্যাত রুশ কবি মারিনা স্বেতায়েভা তাই একবার লিখেছিলেন ‘ফায়ারপ্লেসের ধারে গোগোলের ওই আধঘন্টার কান্ডকারখানা ন্যায়ের স্বার্থে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেক বেশি কার্যকর হয়েছিল – তলস্তয়ের বহুবছরের ধর্মপ্রচারের চেয়ে’।

উচ্চাকাঙ্খা আর অন্তর্দ্বন্দ্ব – এদুটি কারণের বাইরেও অবশ্য আরো দুচার কথা শোনা যায়। একটি গোষ্ঠীর মতে – এই মতটি রুশদেশে বেশি প্রচলিত – লেখকের মুহূর্তের ভুলে ওই কান্ডটি ঘটেছিল। উপন্যাসটির পান্ডুলিপির একাধিক খসড়া ছিল। অন্য একটি খসড়াকে পুড়িয়ে ফেলতে গিয়ে ভুল করে এইটিকে আগুনে দিয়েছিলেন।

আর একটি মত বলে লেখাটি আদৌ দগ্ধ হয়নি। ওটি চুরি গিয়েছিল। ওটিকে গোপনে সরিয়ে ফেলা হয় যা ছিল প্রতিক্রিয়াশীল স্লাভোফাইল-দের কাজ। এই জারপন্থী, রক্ষণশীল, ধর্মান্ধ, গোঁড়া গোষ্ঠীটির নৈতিক ও রাজনৈতিক আদর্শ গোগোলকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। তারা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করত গোগোলের আন্তরিক বিশ্বাসকে, মতাদর্শকে কলঙ্কিত করছে তাঁর এই উপন্যাসের ক্রুরকুটিল চক্রান্তজটিল চরিত্ররা।

তৃতীয় একটি মত প্রচলিত আছে। সেটি অবশ্য খুবই সোজাসাপটা, সরাসরি এবং আপাত এলেবেলে। তা হ’ল, আগুনের ঘটনাটা আদৌ ঘটেনি। ওটি নিতান্তই মনগড়া,  বানানো। নিজের গুরুত্বকে বাড়ানোর জন্য এবং ইতিহাসে জায়গা পাওয়ার লোভে বালকভৃত্য সিমিয়নের কান্ড এটি। সেই বলে বেড়াত এই কল্পকাহিনী।

 

দ্বিতীয় খন্ডের যে পাঁচটি অধ্যায়ের কথা আগে বলেছি, (বলা বাহুল্য সেগুলি বাতিল কোনো অসম্পূর্ণ খসড়ার অংশ) ঘটনাচক্রে তলস্তয়ের হাতে এসে পড়ে ১৮৫৭ সালে। ২৮শে আগষ্ট, ১৮৫৭, তলস্তয় ডায়েরিতে লিখছেন “..‘ডেড সোল্‌স’-এর দ্বিতীয় খন্ড পড়লাম। অত্যন্ত কাঁচা লেখা।” সৌভাগ্যক্রমে গোগোলকে অবশ্য এই মতামতের মুখোমুখি হতে হয়নি।

 

*********

অত্যাধিক উচ্চাশায়, শিল্প বনাম নৈতিকতার যুদ্ধে ছিন্নভিন্ন হতে হতে সর্বশেষ পান্ডুলিপিটিও ধ্বংস করলেন লেখক। শরীর দ্রুত ভেঙে পড়তে লাগল। দেখা গেল মনোবিকলন। বুঝে গেলেন তাঁর স্বপ্নের প্রকল্পটি আর হয়তো সম্পূর্ণ করা গেল না এ জীবনে। অধিকাংশ সময়ে স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি থাকতেন গোগোল।

অগ্নিসংযোগের ঠিক দশদিনের মাথায় শিরায় রক্তের তোলপাড় স্তব্ধ হ’য়ে গেল ‘দা নোজ’ ‘দা ওভারকোট’ ‘ডায়েরি অফ অ্যা ম্যাড ম্যান’ প্রভৃতি কালজয়ী গল্পের স্রষ্টা রুশসমাজব্যবস্থাকে ব্যঙ্গে বিদ্রূপে তছনছ করে দেওয়ার কারিগর এই ডাকসাইটে লেখকের। সমস্ত সংঘর্ষ টানাপোড়েন আর বিতর্কের উর্দ্ধে চলে গেল তাঁর তুচ্ছ মরশরীর। মাত্র তেতাল্লিশ বছর বয়সে। ৪-ই মার্চ ১৮৫২-তে। মস্কো শহরে।