আমাদের কথা

                 যত রকম মানুষ, তত রকম কবিতা। ঠিকই। সমস্ত রকম সম্ভাবনার নামই হয়তো কবিতা। কিন্তু প্রাথমিক কবি-কবি ভাবের পর কবিতাপ্রয়াসীকে একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। আগামী কবিজীবনে সে কাকে গুরুত্ব দেবে বেশি, কবিকে না কবিতাকে ? কবিখ্যাতিই যদি মুখ্য হয়, সেখানে কিছু বলার নেই। অনেক চোরাগলি আছে। কিন্তু রহস্যময়, নাছোড় কবিতাই যদি কবিতা প্রয়াসীর লক্ষ্য হয়, তাকে পরিশ্রম করতে হবে প্রচুর। বাংলা কবিতার নব্য সাধককে ধীরস্থির দাঁড়াতে হবে চর্যাপদ থেকে আজ অবধি বাংলা কবিতাপ্রবাহের সামনে। কী চেয়েছেন, কী রেখে গিয়েছেন পূর্ববর্তী সাধকেরা  জানতেই হবে। আয়ত্ত করতে হবে ছন্দ, অলঙ্কার, আর আবহমান বাংলা কবিতার কল্লোল। টের পেতে হবে দেশীয় ঐতিহ্য আর বিদেশী প্রেরণাকে। অনুভব করতে হবে কবিতার নাদ ও নিঝুম।

           
            ধুলোমাখা, সাদাসিধে বাংলা কবিতা প্রকাশ করে আসছে কবিতা আশ্রম । বিদ্বেষ নেই, হীনমন্যতাও নেই, আছে নব্য কবিতাপ্রয়াসীর প্রতি কর্তব্য। মানুষের সঙ্গে মানুষের মতো যে কবিরা বেঁচে থাকেন, লিখে রাখেন নিজের সামাজিক-জাগতিক-মহাজাগতিক যাপনের কথা, যাঁরা দয়ালু, যাঁরা মায়াভরা, যাঁরা অন্যের দুঃখে দুঃখী–সেই কবিদেরই আশ্রম আমাদের স্বপ্ন। লড়াকু ও উদাসীন, অভাবী ও ভাবুক, বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে মানানসই, এইসব মানুষের পৃথিবীই ‘কবিতা আশ্রম’। নদী-পাহাড়-গাছপালা-পাখি-কীটপতঙ্গের জীবনধারণাতেই বাস করে কবিতা। শব্দসাধকদের প্রকৃতির শব্দ শোনাও জরুরি। ঝিঁঝিদের ডাক, কান্না না গান, সেটা বোঝার দায় আছে তো!