You are currently viewing সাপ্তাহিক কবিতা আশ্রম ১৮৬ সংখ্যা
ঋণ : ভ্যান গঘ

সাপ্তাহিক কবিতা আশ্রম ১৮৬ সংখ্যা

রূপক চট্টোপাধ্যায়ের কবিতাগুলো হৃদয়-উৎসারিত রচনা–যেন হৃৎপিণ্ডে জিভ লাগানো আছে; তাই এক নিমেষের জন্যে উদাসীন হতে দেয় না পাঠককে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধ্রুপদী ভায়োলিনের বিষাদ আছে। চিত্রকল্পগুলি চমকে দেবার ক্ষমতা রাখে। প্রাঞ্জল এবং ইঙ্গিতবাহী। লক্ষণীয়, চলমান এবং চেনা দৃশ্যগুলোকে অদ্ভুত করে তুলতে পারেন তিনি। রূপক শক্তিশালী।

…কবিতা আশ্রম

রূপক চট্টোপাধ্যায় 

রূপক চট্টোপাধ্যায় 

গমক শুনেছি যখন


তোমার অস্তিত্বের গমক শুনেছি যখন 
এই অনাহার আমার একান্ত আপন,
এই ডামাডোল খেলায়
ভেসে যাওয়ার চিবুকের ওপর
স্থির রৌদ্র রেখা, আমার একান্ত আপন।


বাকি সব মিথ্যা, ঘরে ফেরার ছলনায় 
ট্রেন ধরার পড়ি মরি দৌড় 
গড়িয়ে যাওয়া টিফিন বাক্স 
কনুই মেরে এগিয়ে যাওয়া পুরুষ 
সব মিথ্যা। 


এই মুখোমুখি হওয়ার পর কিছু না বলা 
অভিমানের সালফার ছড়ানো মুহূর্তগুলি
একান্তই আপন হয়ে উঠুক! 





ভাগ্যদোষে আমিও প্রেমিক।
অথচ তোমার মতো
প্রসব বেদনার সাধ আমারও জাগে!
তাই মাঝ রাতে নগ্নতা পরে ছাদে যাই 
আকাশ খুলে খুলে দেখি
নীহারিকার বাদামি আলোয়
আমিও প্রসব করছি অনন্ত কালের লেখাগুলি…




৩ 
আমি তো আত্মহত্যাপ্রবণ,
তবে কেন তোমার শ্বদন্তের  তীক্ষ্ণতার আগে
জড়সড় হয়ে থাকি! 
সাঁকোর ওপাশে জন্ম রেখে ভয়ে ভয়ে সাঁকো পার হই


যেমন করে চারণভূমি ছেড়ে চমরী গাই নিয়ে 
ঘরে ফেরে বিকেল বালক পাহাড়িয়া পথে,


আমিও ক্রমশ ফিরি তোমার দিকে
ক্রমশ সরল সহজ সুলভ হই তোমার, হে হত্যাকারী! 






৪ 
চুম্বনে বিষ ছিল না বলে
আমার মুক্তি হল না আজও
অসফল রাতের মুন্ডু কোলে নিয়ে বসে আছি। 


ভোরের বাস এলে ফিরে যাব।
ফিরে যাব ধর্মহীন শিশুদের দেশে
যেখানে নগ্নতাই পোশাক হয়ে যায় 
আর সব হাসি রামধনুর মতো জড়িয়ে থাকে
দুঃখী মাটির শস্য আবিষ্কার! 





কোনওকিছুর মতো করে তোমাকে পেতে চাইনি,
শুধু তোমার ভেতর একটা দেশ, আকাশী-নীল মানুষ, 
একটা পাহাড়,  বনান্তের একটা নদী জন্ম হোক।
যার জন্য আমিও 
বহুরাত ভ্যান গঘের আত্মার পিছু পিছু 
কুকুরের মতো ঘুরেছি,
অনন্ত একটা গম খেত দেবার 
প্রতিশ্রুতি আদায় করব বলে ঘুরেছি।


এটুকুই গুছিয়ে রেখো তোমার জলবিম্বে রোজ!