কবি ও প্রাবন্ধিক শামীম নওরোজের জন্ম ২১ আগস্ট, ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ। পেশায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত সরকারি কলেজের বাংলা ভাষার শিক্ষক। শামীম মনে করেন তিনি ধীরে ধীরে সরে আসছেন নিজের দিকে। নিজের কাছে, নিজের জীবনের কাছে। আত্মার কাছে। আত্মার প্রতি পলের স্পন্দনকে তিনি ধরে রাখছেন কবিতায়। কবিতা হয়ে উঠছে স্বয়ংক্রিয়। স্বয়ং হয়ে উঠছে মহাজাগতিক। ব্যক্তিগত অনুরণন ছড়িয়ে পড়ছে নিখিলবিশ্বে।
…কবিতা আশ্রম
শামীম নওরোজের কবিতা
সোনালু ফুলের রেণু
১.
স্নানদৃশ্যে দেহদৃশ্য গোপন থাকে না
ভেজা শরীরের উত্তাপে আঁচল পোড়ে
প্রজাপতি উড়ে-উড়ে ফিরে আসে বিজন সন্ধ্যায়
স্নান শেষে পালকে ঠোঁট গুঁজে একাকী ঘুমায়
লৌকিক পতঙ্গ ফিরে আসে স্নানদৃশ্যে
জলদৃশ্য ফিরে যায় গভীর সমুদ্রে
এটা কোনো গল্প নয়
মেঘ-বৃষ্টি নয়
ঘামদৃশ্যে দেহদৃশ্য গোপন থাকে না
২.
তোমার শরীর ছুঁয়ে আকাশ পেয়েছি
আকাশের গ্রামখানি অন্যের দখলে
অনন্ত আঁধারে জোছনার সাদা ফুল
এখানে রোদ্দুর আছে
বাতাসে জবার রেণু
ওঝার বাড়িতে কতিপয় সাপ ও নেউল
এখানে থাকে না কেউ
ভেতরে আঁধার
উঠোনে ধানের গন্ধ
৩.
এই দেখ সোনার ফসল
সব ভূমি পাললিক নয়
কিছু ভূমি বালুতে ঘুমায়
বিকালের ক্ষেতে গোলাপি রোদ্দুর
সন্ধ্যায় আঁধার
শস্যের বাঁশিতে বাজে ঘামের সরোদ
আলো দেয় প্রত্যাশিত সূর্য
আলোকিত সবুজ পাতাটি উড়ে যায় কৃষাণীর ঘরে
৪.
কাঠের চিরুনি বেশ দামি
শব্দের সততা ধুয়ে কেউ-কেউ জলপান করে
বলেছি অনেক কিছু
শুনেছিও বেশ
নূপুরের ধ্বনি এসে ঘুরে যায় পাড়া
আমি যাচ্ছি স্বর্গবাসে
থামানোর কেউ নেই
কাঠের চিরুনি খুলে দিচ্ছে মেঘের কেয়ারি
৫.
মাটিলগ্ন বাস
ফিরে গেছে মাটি ও মানুষ
বিষাক্ত সাপের সঙ্গে এক বিছানায় ঘুম
ভাতঘুম সাপের ফণায়, বিষে
এ সত্য স্বর্গীয় নয়
সবটুকু লৌকিক
মাটির পুতুল
কারিগর অপর্ণা বিশ্বাস…
শিল্পীর আঁচলে মা লক্ষ্মীর দান
মানুষ নেই
সাপ ও নেউল
পুড়ে যাচ্ছে ছায়ার মমতা