মুজিবরের কবিতা যেন নির্জন প্রান্তরে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে তারাদের সঙ্গে কথা বলা। রহস্যমেদুর। মরমিয়া এই বার্তালাপ।
…কবিতা আশ্রম
মুজিবর আনসারীর কবিতা
দানবী
কোন জাদুবলে তুমি এতটা সাহসী
গভীর ক্ষতের থেকে তুলে আনো
তোমার শৈশব, মুক্তি, রঙিন প্রবাল
কোথায় শিখেছ এই সন্তরণ
ঘাটে ঘাটে যন্ত্রণার দাহ
তোমাকে এক চুলও বুঝি স্পর্শ করেনি!
তোমার হাতেও বুঝি সেই শিখা
কী এক অলীক টানে যার দিকে ধেয়ে আসে
পতঙ্গের দল
আর সেই আত্মাহুতি
তারিয়ে তারিয়ে তুমি উপভোগ করো
কোন জাদুবলে তুমি, হে দানবী
পৃথিবীর বুক চিরে রক্ত পান করো?
আকাঙ্ক্ষা
তবু যে নিদ্রা যাও সারারাত
জেগে ওঠো ভোরে
সেটুকুই সান্ত্বনা আমার
স্বপ্নে, কিংবা স্বপ্নহীন এই বেঁচে থাকা
তবু যে কাঙ্ক্ষিত, তুমি মানো
আর জানো
আমাদের মধ্যিখানে
এই যে দূরত্ব, দেশ, দেহজ পর্দাখানি
চোখের জলের মতো
মুছে নেওয়া যায়
ছোঁয়া
প্রথম ছোঁয়ায় মৃত্যু, দ্বিতীয়তে
পুনর্জন্ম হোক
তারপর আর কোনও মৃত্যু নেই
ভয় নেই
জাগতিক ছলাকলা নেই
কেবল নৈঃশব্দ্য এক
পরানে পরান শুদ্ধ, সমাহিত ধারা এক
কেবল তোমাকে ছুঁয়ে থাকা…
ভালবাসা
কে বলে যাতনা শুধু?
ভালবাসা অন্তহীন হো হো অট্টহাসি
সবুজে সবুজ মন, রক্তবমি
সারারাত বিড়বিড় কামের প্রলাপ-
কে বলে এসব অর্ঘ্য, ভালবাসা?
সে তো শুধু খড়্গহাতে
ধূর্ত পৃথিবীর বুকে প্রলয়নাচন
যদি ভালবাসতে চাও একান্তেই
আমাকে চড়াও শূলে
হাত কাটো, পা কাটো
মাথা কেটে নাও, সোনামণি
বীজ
পাতাটা পাল্টে নিলেই পরলোক,
তবু একটা কবিতা থেকে
আরেকটা কবিতায় যেতে
কয়েকটা জীবন পেরিয়ে যেতে হয় কবিকে
নিজেরই কবর থেকে
তুলে আনতে হয় তাঁকে কবিতার বীজ