গণেশ মারান্ডির কবিতা
পুরুলিয়া জেলার এক গ্রামের যুবক গণেশ মারান্ডি। পেশায় স্কুলশিক্ষক। সাঁওতালি ভাষায় কবিতা, গল্প এবং ছোটদের গল্প লেখেন। সাঁওতালি ভাষায় লেখা ছোটদের ছড়া বা কবিতার বই ‘হপন মাই’-এর জন্য ২০২২ সালে পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। সাঁওতালি ভাষায় একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকাও প্রকাশ করেন তিনি। পত্রিকার নাম
‘সারজম উমুল’। গণেশ মারান্ডি সাঁওতালি ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষাতেও কবিতা চর্চা করেন। এবারের সংখ্যায় প্রকাশ করা হল বাংলা ভাষায় লেখা তাঁর পাঁচটি কবিতা।
–কবিতা আশ্রম
রবনি টুডুর হাসি
ধানের শিসে
ধানের শিসে
ভাত ফুটছে গো —
রবনি টুডুর চোখে
ভেসে উঠছে খিলখিল হেসে ওঠা উঠোন, মাচার পুঁই শাকের লতা।
ভাত ফুটলে
ফুটে গো মুখ — চোখের পাতার ছিটকিনি,
ধানের শিসে
আজ বাসা বেঁধেছে
রবনি টুডুর হাসি।
জোনাকি
আঁধারের কাছে হেলান দিয়ে
সাজিয়ে রেখেছি
দু’একটি পাতা ঝরার গল্প।
পাশে এসে দাঁড়াও
একসাথে আলিঙ্গন করি আঁধার।
যদি পারি
হয়ে উঠব পুড়ে পুড়েই
আস্ত জোনাকি।
আশ্রয়
মাটিতে পড়ে আছে এখনও চাপ চাপ রক্ত
আকাশে বারুদের গন্ধ
আর হাসছে
চার্চ -মসজিদ- মন্দির — আরও কত কী!
আমি কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?
ওই তো দাঁড়িয়ে একটি শিশু
একা শুধুই একা,
আমি দাঁড়াব তারই পাশে।
ওরা
আমাকে নিয়ে ওরা টানাটানি করে,
দেখায় প্রলোভন — চোখরাঙানি।
ছিঁড়ে ফেলেছে আমার হাত
কান — নাক — চোখ,
পড়ে আছে
শুধু মাথা।
ওরা মাথা ঘামায়
আমার মাথা ছিঁড়বে বলে।
আর কত দিন
মাথা আটকে থাকব!
দলছুট
আজকাল পতাকা দেখলেই
ভয় হয় —
দলবাজি হওয়ার ভয়!
কিন্তু
সবশেষে দাঁড়াতেই হয়
কোথাও না কোথাও,
কোনও দলের ভিড়ে।
দলবাজি বুঝি না —
ভাল-মন্দ যদি বুঝতে পারি
তবে দলছুট হতেও রাজি আছি।
প্রকাশিত