You are currently viewing সাপ্তাহিক কবিতা আশ্রম, ১৪০ সংখ্যা

সাপ্তাহিক কবিতা আশ্রম, ১৪০ সংখ্যা

Painting–Sunil Das

নির্মল হালদার

বাথান

চরতে চরতে গরুর দুধ ঝরে গেলে
আলপনার রেখা হয়ে ওঠে।
ওরে ও বাথান, তুই কি তুলে নিয়ে যাবি?

আঁকাবাঁকা রেখা হয়ে উঠবে আলপনা

ঘরের শ্রী।

ঘরের কল্যাণ।


দুধে দুধে ভারি হয়ে গেছে গরুর থন

কে চুরি করবে দুধ?

থন থেকে কে টানবে দুধ?

গাছ থেকে চেয়ে আছে পেঁপে

দুধের অভাবে শুকিয়ে উঠছে।


হাওয়া নয় যেন ঝড়
চৈত্র শেষের ঝড় এই দুপুরে
ভয় পেয়ে লাফিয়ে উঠছে গরু
যেন বা খসে যাবে লেজ
যেন বা মাথা থেকে উপড়ে যাবে শিং

গরু চরাতে এসে মৃগাঙ্কর মা আলুথালু।

Sunil Das

অমিত দে

একটি পুকুর খুঁড়েছি নিজের বুকে
দিঘল নিঝুম ডালপালা ছায়া ফেলে রোজ
তপ্ত দুপুর আদায় করে শ্বাপদের মতো দেনা

নতুন বর্ষায় আয়ু হয়ে ওঠে বেহিসেবি জল—
পার ধসায় সবুজ মরশুমে
শেকড় আঁকড়ে গেয়ে ওঠে,
যেন চোখ থেকে ধুলোবালি মুছে দেয়
যন্ত্রণা ভুলতে চাওয়া এক আগমনি ফসল

ছোট রাত দীর্ঘ আঁচল জড়িয়ে নেয়
বাকি কথারা নিশ্চল —নীচু স্বরে ডাকে
সাবালক দিনগুলি ক্ষয় লুকিয়ে উঠে দাঁড়ায়

হারানোর বিপরীতে অলীক মাটির
রক্তবীজে বাঁচে।

William Kentridge

বন্যা লোহার

আমার বিচরণক্ষেত্রের
বর্ণে গন্ধে জৌলুসে
এ নিদাঘদৃশ্যটি বস্তুত উজ্জ্বল

বিসদৃশ বলতে কেবল রয়েছ তুমি

ম্লান, অনাড়ম্বর ও বিদায়ে প্রস্তুত

অভ্যর্থনা আমার প্রবৃত্তি নয়

গমন পূর্বে তোমাকে দেব
কেবল আমি দিতে পারি
এমন দুঃখের দিন

আমার অভিজ্ঞান

যাও হে অর্বাচিন
চরাচরে ‘নিষ্ঠুর’ নামে
আমার প্রচার করো

Sunil Das

প্রবীর কোনার

আজ না হয় কাল ফিরে আসবে জানি।
এই যে রাতের পর রাত নদী এঁকেছি,
অববাহিকার উপর দিয়ে কত হেঁটে গেছি,
প্রতিটি প্রবাহের গোপন স্বর তন্নতন্ন করে ঘেঁটে দেখেছি,
ভিতরে ভরা শ্রাবণের বিদ্যুত।
আমি যদি ভুল বলি,
ছাদে উঠে দেখ পূর্ণিমার আলোয়
আমার কোনও ভুমিকা নেই।
তবু সে তোমাকে দেখাবে বলেছিল বসন্তের রাতে।
কি করে বোঝাব বলো
চাঁদও ভেবেছে আমার শুদ্ধ যাত্রার শেষে তুমি।
ভালোবাসব বললেই হয় না
জানতে হয় চোখের চিহ্ন, মনের জ্যামিতি।
এছাড়া কিছু লাজুক হাওয়া
যারা কড়া নেড়ে নেড়ে ঘুম ভাঙিয়ে দেয় আমার।
জেগে উঠে দেখি একটা শব্দহীন ঝড়
ফুলের দেশের কথা বলে দিয়ে চলে গেল।

Larry Graeber

দেবীপ্রসাদ ঘোষ

নিস্পৃহ জলের ভেতরে বিম্বের মতো
কেঁপে ওঠো তুমি, রোজ।
ছুঁতে গেলে
মাটিতে কামড় ছাড়া উঠে আসে আর
কেবল দুমুঠো মাটি;

গন্ধর্বডুবুরি,সেও, তোমার ছায়াশরীর
খুঁজে নিতে নিতে
অনায়াসে দ্বিতীয় ঈশ্বর খুঁজে নেয়

নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে তবু তুমি
স্থবির বৃক্ষটি যেন;
জলভরা পুকুরের পাড়ে!