বের্টোল্ট ব্রেখটের কবিতা
ভাষান্তর: গৌতম চক্রবর্তী
চিত্রকর হিটলারের গান
১
চিত্রকর হিটলার বলল:
প্রিয় জনগণ
তোমাদের জন্য
এই কাজটি আমি
করতে চাই।
সে সদ্য গোলা
এক গামলা চুনকাম নিয়ে
জার্মানির ঘরবাড়ি
নতুন করে রাঙাল।
জার্মানির সঅঅঅব ঘরবাড়ি
২
চিত্রকর হিটলার বলল:
নতুন করে গড়তে
বেশি সময় লাগে না!
তাই গর্ত, ফাটল কিংবা দোষ
সব ভরাট করে দেওয়া হল
রঙে, শুধু মাত্র রঙে।
ফালতু যা কিছু সঅঅঅব
ভরে দেওয়া হল রঙে।
৩
ওহে, চিত্রকর হিটলার,
তোমার হওয়া উচিত ছিল
এক রাজমিস্ত্রি!
তোমার বাড়ির
চুনকাম করা দেওয়ালে
বৃষ্টির ছাঁট লাগলে
সব ময়লা আবার
সকলে দেখে ফেলবে।
ফালতু বাড়িটার সঅঅঅব
আবার দেখা যাবে।
৪
রং নিয়ে কখনও
পড়েনি হিটলার।
রং তাকে উদ্বুদ্ধ
করেনি কখনও।
এমনকী রং করার
এই কাজ করতে
তাকে দেওয়া হলেও
সব কিছুর উপরেই
সে লাগিয়ে দিয়েছিল
রঙের পুরু প্রলেপ।
সমগ্র জার্মানির উপরেই
রঙের পুরু প্রলেপ।
উপরে যারা ছিল
আলোচনায় এক ঘরে।
রাস্তায় একটি লোক
সব আশা থেকে দূরে।
সরকারের মধ্যে
সই হচ্ছে নানা
অনাক্রমণ চুক্তি।
সামান্য তুমি মানুষ,
লেখো তোমার ইচ্ছা
কীসে তোমার মুক্তি।
যুদ্ধের প্রারম্ভে
ভাই বদলে যেতে পারে,
মুখ দেখে তুমি চিনবে না
আর একই রকম থাকবে।
তুমি যুদ্ধে যাবে, যেমন
কসাইখানায় যাও
ঠিক সেরকম নয়, যেন
যাচ্ছ এক দরকারি কাজে।
তোমাকে সবাই ভুলে যাবে কিন্তু
ভুলবে না তুমি কোনও কথা।
তোমার গলায় নামবে সুরা
ঠিক যেমন সবার নামে
কিন্তু সংযত থেকো তুমি
যাপনের সেই যামে।
চিত্রকরের কথা
যত বেশি গোলা-বন্দুক
শান্তি তত দীর্ঘ।
তাই একথার অর্থ:
শস্যচারা রোপণ যত বেশি
গমের উৎপাদন তত কম।
যত বেশি গবাদি পশুর নিধন
তত কম মাংসের সরবরাহ।
পর্বতশীর্ষে যত বেশি বরফের গলন
ধারাপ্রবাহ তত অগভীর।
যুবা সম্প্রদায় এখন বইয়ের পাতায় মগ্ন
কেন শিখতে চায় ওরা? কোন বইতে লেখা আছে
কীভাবে জল পাও তুমি
যখন তোমার শরীর কাঁটাতারে ঝুলছে।