রামকুমার আচার্য বাঁকুড়ার তরুণ কবি। এই সংখ্যায় পড়ুন তাঁর কিছু কবিতা। প্রকৃতি ও মানুষের আত্মার সম্পর্ক এখানে স্বপ্নের মতো ঝিকমিক করছে।
রামকুমার আচার্য
বেতলা ফরেস্ট
একদিন ঝমঝম বৃষ্টির ভিতর
জন্ম হয়েছিল এই অরণ্যের
ডাল পালায় বড় হচ্ছে
কৃষ্ণ কালো শাবক,
পাহাড়ি বাঁকা রাস্তা বেয়ে
গড়িয়ে গড়িয়ে পড়তে চায়
পথের বাঁকে ভেসে আসে নুড়ির রিনিঝিনি
মেয়েলি ঝর্না জলের ছোঁয়ায়
ধস নামছে যখন হুড়মুড়িয়ে
ক্ষয়িষ্ণু মাটিতে জীবন আঁকড়ে
ধরে আছে শাল, কুরকুট
তবুও নতুন পাতা আসবে বসন্তে
বেতলা আমার বুক
বুকেই হবে বৃক্ষ রোপণ
পাইনের বাংলো
বাবা যখন চলে গেল পাহাড়ে
একা একা
আমাকে আটকে দেয় মহাজাগতিক পাথর
গায়ে জড়িয়ে যায় দায়িত্বের অন্তর্জাল
বাবার জন্য ভাড়া নিয়েছি
পাইন জঙ্গলের একটা বাংলো
নির্জন সরু একটি পথে হবে দেখা
তারাদের সাথে কথা বলে কেটে যাবে দিন
কেচকি
এলিয়ে পড়া বিকেল জানে
কোয়েলের বালি সহজিয়া
আগলে রাখতে চায় বাঁধনে
তার জলের নীরবতার কাছে
হাঁটু গেড়ে বসে থাকে
আমার অহংকার
নদীর চর সাজিয়ে রেখেছে কেচকি
আমি ও আমার মেয়ে
হেঁটে যাব সূর্যাস্তের দিকে
লোধ জলপ্রপাত
পাহাড়ের কান্না শুনেছ!
পাহাড় যখন কাঁদে
নেমে আসে জলপ্রপাত
কিছুদূর গিয়ে হারিয়ে যায়
সমস্ত যন্ত্রণার জল
লোধের কাছে ধার নিয়েছি কান্না
লোধের অশ্রুধারায় ওঠে রামধনুও
আমার সব কান্না উৎসর্গ করেছি
ছুঁতে না পারা বাবাকে
লোধের মতো আমিও জলপ্রপাত