আসছে শুভঙ্কর পাত্রের নতুন বই
অগ্রিম বুকিং ৩০০ টাকা

কবিকথা

জন্মেছি নদীর কূলে
কবি সুকান্ত মণ্ডলের জন্ম ১৫ মে ১৯৭৬।
জন্মস্থান ও পৈতৃক বাসস্থান টংতলা গ্রাম।
থানা সন্দেশখালি। মহকুমা বসিরহাট। পশ্চিমবঙ্গ। ৭৪৩৪৪৬। পিতা শ্রীসুধীর মণ্ডল। মাতা বিশাখা দেবী।
জন্মেছি নদীর কূলে ভালোবাসা-বাঁধা বাসায়।
সুকান্ত মণ্ডল
সেখানে মানুষের অবিশ্বাস নেই। বিশ্বাসময় এক স্নেহে। তারপর নদীর ঢেউ দেখতে দেখতে বড় হয়ে ওঠা। ধানের গুচ্ছের হাওয়ায় অঙ্গ জারিত করতে করতে এক পা-দু’পা। সবাই যেভাবে বড় হয়।
আমার কবিতা ও জীবন পাশাপাশি সমান। জীবনে অভাবের মুহূর্তগুলো কবিতায় চলে আসে। জীবন-জিজ্ঞাসায় বেঁধে আছে যেন চারপাশ। সেই চরাচর থেকে উঠে আসে আমার কবিতা। দুঃখ-নূপুর বাজিয়ে।
কবিতাগুচ্ছ
সুকান্ত মণ্ডল
চাঁদ পুড়ছে বিধবা পাড়ায়
চাঁদ পুড়ছে বিধবা পাড়ায়
অনামিকা চুল খুলে রাখে
অনিঃশেষ তোমাকে ডেকে আনে ফের।
নৌকার প্রথম ভাসান
অন্ধকার ছিঁড়ে প্রবাহিত কালিন্দী
লখিন্দরের হাড় ধুয়ে রাখে
হাতে লাগে কেওড়া ফলের বীজ
সমুদ্র মাছের কাঁটা
বেজে ওঠা ধমনীর তন্ত্রীতে নক্ষত্রের আলো এসে পড়ে
জেগে উঠে সুন্দরবনের পাড়া
উরুর ওপরে ছায়া তুলে রাখে কুমিরমারির চর
বাঘে ও ভাল্লুকে খায় ভেসে যাওয়া কালিন্দীর বাসি মড়া
নৌকার প্রথম ভাসান ভেতরে চেপে রেখে দাঁড় বাইছি
মুখোশহীন স্বচ্ছনদী জলে ।
নাম সুধা
লগ্নহারা সন্ধ্যা আজ নেশাতুর ঘরে
ধানফুল শুঁকে নিচ্ছে মহেন্দ্র বাতাস
কোন দিকে বইবে? ঝিনুকের খোলে যেন আবেগের মুক্তো
ক্ষয় লাগা পাড়ে পাড়ে সোনাঝুরি ঋতুমতিটং
পাতার পোশাক মালা অনন্তের দুয়ারে দুয়ারে চৈতন্যের হাঁটা
অপেক্ষার বীজ ফেলে ফেলে যায় নাম সুধা
সেই নামে টোর হয়ে জগাই মাধাই — এনেছে করতাল চিহ্ন মৃদঙ্গ বাঁশি প্রেম ।
রুপালি ফর্মা জুড়ে
বেয়ে যাওয়া লতাগুল্মর মতো রোদকে কাছেই রেখেছি আমি
পরে তুমি ছায়া ভিখারিনী হও যদি
কিছু গাছ তোমাকে দেব ভেবে লাগিয়ে রেখেছি
বর্ষা ঋতুর অঙ্গীকার ক্ষোভ চিহ্নে তোমারও কপাল ঝরে
এঁকেবেঁকে যাওয়া মধ্যদুপুরগুলি
ক্ষণস্থায়ী সূর্যকে দেয় ঢেলে।
দীর্ঘশ্বাসের ইট বিছানো পথে
কত সন্ধ্যা ফিরে গেছে ওই দূরে
কত নদী আর কত ঢেউ ছিল তাতে
নিভন্ত দিনের আশ্রয় বসে আঁকি
তোমার ছায়া রুপালি ফর্মা জুড়ে।
আকাশের ঘোড়া
এত তাপ, দাহ, ব্যর্থতার গনগনে আকাশ
মলিন পথের পাশে নুয়ে পড়ে আছে।
কী জানি ভাবনার শেষ কোথায়?
চক্রের ভেতরে অর্ধচক্রের পুণ্যস্নান
যৌনতা কমে আসে ব্যাধিগ্রস্ত পৃথিবীর শরীরে
ভগ্ন ছায়া পথে রূপরেখাহীন হেঁটে যাওয়া
অনিশ্চিত পিপাসা বাড়ে, আলেয়া বিভ্রম
কোন আলো কার চোখে লাগে নৈকট্য গড়ায় দিন দিন। মরীচিকা নয় যেন
আকাশের ঘোড়া, দিয়ে যায় শেষ হ্রেষাধ্বনি
কবিকথা

বাংলাদেশের এই সময়ের নতুন শক্তির কবি ফিরোজ শাহ-র জন্ম ১ জুলাই ১৯৮৭ নোয়াখালিতে। কী তাঁর কবিতা-পৃথিবী?
অলোক বিশ্বাস
ফিরোজের পরিণত কবিতা বাংলা কবিতার নতুন এক স্বর। নতুন এক হাইপার রিয়েলিটি, অথচ খুব সংহত, সংযত। নতুন চিন্তাবাস্তবের কাজ। … ফিরোজ শাহ ছোট কবিতায় নিজস্ব আবেগের মায়াবিহারী রূপবৈচিত্র্য খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
কবিতাগুচ্ছ
ফিরোজ শাহ
যুদ্ধ
একটা রাত
ইঁদুরের
শরীর থেকে খুলে
ঘরে ঘরে
রেখে আসে কালো বিড়াল।
মন
লাল দরজা
পুড়ে
ধোঁয়া হচ্ছে
ঢুকে যাচ্ছে সাদা দরজায়…
বসবাস
জলের
কয়েন জমে জমে
চোখের নীচে
বেড়ে ওঠা কালো পাহাড়ে
গড়ে উঠেছে
আমার বসতি।
প্যালেস্টাইন
সিগারেটের
ছাই জমা
সন্ধ্যার মাংস নিয়ে লাল আগুনে
ঝাঁপ দিচ্ছে
ম্যাচবাক্সের মৃত মানুষ
বারুদের গন্ধে
প্যালেস্টাইনের সব ফুল
মিসাইল হয়ে উড়ে যাচ্ছে…